আসন্ন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
ইশতেহারে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিতকরণ, মানসম্মত চিকিৎসা ও শিক্ষা, ডিজিটাল সুবিধা সম্প্রসারণ, এবং পরিবেশবান্ধব সবুজ ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ইশতেহারে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালীন সময়কে শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় হিসেবে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে গেস্টরুম–গণরুম সংস্কৃতির বিলোপ, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বন্ধ করা, র্যাগিং–বিরোধী অবস্থান, ক্লাসরুম সংকট সমাধান ও ক্যান্টিন–ক্যাফেটেরিয়া উন্নয়ন।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়, সর্বোচ্চ সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। রাতে হলে প্রবেশের সময় বাড়ানো, এক হল থেকে অন্য হলে যাতায়াতের সুযোগ তৈরি এবং পড়াশোনা শেষে বেকার নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ছয় মাস বিনা খরচায় থাকা–খাওয়ার হোস্টেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যবিমা চালু, মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকীকরণ এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য টিএসসিতে বিশেষ ইউনিট স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণাকে বিশ্বমানের করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল। এর মধ্যে রয়েছে কারিকুলাম উন্নয়ন, ক্রেডিট ট্রান্সফারের ব্যবস্থা, লাইব্রেরি আধুনিকায়ন, সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক র্যাংকিং উন্নত করার উদ্যোগ।
ইশতেহারে পরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। বাস ও ব্যাটারিচালিত শাটল সার্ভিস বাড়ানো, রাত ৯টা পর্যন্ত চলাচলের ব্যবস্থা, প্রতিটি বাসে জিপিএস ট্র্যাকার বসানো এবং অ্যাপের মাধ্যমে বাসের অবস্থান জানার সুবিধা রাখার কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে ডিজিটাল করা হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও অন-ক্যাম্পাস চাকরির সুযোগ সৃষ্টি এবং উদ্যোক্তা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা ও শিল্প-সাহিত্যচর্চা বাড়ানো, বার্ষিক অর্থ অনুমোদন বৃদ্ধি, সাইবার নিরাপত্তা সেল গঠন, বিনা খরচে ক্লাউড স্টোরেজ, সফটওয়্যারের সাবস্ক্রিপশন সুবিধা এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধে আইনি সহায়তার ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতিও ইশতেহারে স্থান পেয়েছে।
সবশেষে, বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবেশবান্ধব ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাসে রূপান্তর, কার্যকর ডাকসু গঠন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডাকসুর পরিচিতি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল।