সাকা চৌধুরীকে ‘বিচারিক হত্যা’

তথ্যের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উকিল নোটিশ দেবে পরিবার

dunews / ২১ Time View
Update : শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ‘বিচারিক হত্যা’ (জুডিশিয়াল কিলিং) করা হয়েছে– এই অভিযোগ প্রমাণের জন্য তথ্যাদি সংগ্রহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উকিল নোটিশ পাঠাচ্ছে তার পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় পরিবারের সদস্যদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী জানান, আগামী রোববার তারা এ নোটিশ পাঠাবেন।

২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে সর্বোচ্চ আদালতেও সে রায় বহাল থাকে। একই সময়ে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদেরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে হুম্মাম কাদের বলেন, ‘আমার বাবার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চার ব্যক্তি– মুনীম আরজুমান খান, আমবার হারুন সাইগেল, ইশহাক খান খাগওয়ানি ও নিয়াজ আহমেদ নূর বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তা নাকচ করেছিলেন। পরে ইউটিউবের মাধ্যমে তারা প্রমাণ জনসম্মুখে তুলে ধরেন।’

তিনি বলেন, ‘এই চার ব্যক্তি প্রমাণ করতে পারতেন– ১৯৭১ সালে পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন আমার বাবা। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি দূতাবাসে সাইফার মেসেজে তাদের ভিসা না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল। এই সাইফার মেসেজই প্রমাণ, আব্বার সঙ্গে খুব বড় অন্যায় করা হয়েছে। আমার নির্দোষ বাবাকে তারা হত্যা করেছে। এটি একটি জুডিশিয়াল মার্ডার। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার সরাসরি জড়িত ছিল।’

হুম্মাম কাদের বলেন, ‘আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাচ্ছি। আমরা চাইছি, সাইফার মেসেজগুলো ডি-ক্লাসিফাই করা হোক। আশা করছি, আপনারা এ হত্যার ন্যায়বিচার পেতে সহযোগিতা করবেন।’ এ সময় সাইফার মেসেজ পাঠানোর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যারা জড়িত, তাদের নাম প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

 

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাননি

হুম্মাম কাদের বলেন, আমি ফাঁসি কার্যকরের আগে বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম– আব্বা তুমি কোনো মার্সি পিটিশন ফাইল করেছ কিনা? বাবা বলেছিল– ‘আমি ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা মানুষ। আমার মাথা কারও কাছে নিচু হবে না। আমি আল্লাহর কাছে যাচ্ছি, আল্লাহর কাছে গিয়ে বিচার চাইব।’

 

তিনি বলেন, ‘ওই সময়ে যে কাগজ আমার হাতে সবাই দেখেছে, সেটি একটি রি-ট্রায়ালের পিটিশন। আমি নিজে সেটি নিয়ে গিয়েছিলাম রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি (মোঃ আবদুল হামিদ) তখন আমার সঙ্গে দেখা করেননি। তিনিও লজ্জা পেয়েছিলেন।’

 

সহযোগিতা পেলে যাব আদালতে

হুম্মাম কাদের বলেন, ‘আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করেছি। সরকারের সহযোগিতা পেলে; মেসেজগুলো প্রকাশ হলে একটি গ্রাউন্ড তৈরি হবে। আমরা রিটের মাধ্যমে আদালতে যেতে পারব।’

 

গ্রেপ্তারের পর চরম নির্যাতন

 

সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাছে এখনও ভিডিওগুলো আছে। যখন রাতের বেলা উনাকে নিয়ে যায়, সারারাত নির্যাতন করার পর পিজি (বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালের একটি ভিডিওতে তাঁকে যখন বের করে আনছে, মারধর করতে দেখা যায়। তাঁর শরীরের এখানে-ওখানে রক্ত।’

 

সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ব্যারিস্টার ডানিয়া খন্দকার, মাহবুবুল আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category