আওয়ামীলীগ সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তখন কোন ধর্মীয় কিংবা জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন ঘটে না। কিন্তু ২০০১ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। জনগনের পাশে দাড়ানো ধর্মনিরপেক্ষ সরকারকেই সংখ্যালঘুরা ভোট দেয় বলে তাদেরকে নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ষড়যন্ত্রের উৎপাটনই শোকাবহ আগস্টের অঙ্গীকার’ শীর্ষক সেমিনারে এসকল কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে নির্যাতনের বিভৎসতা দেখে সারা দেশ স্তব্দ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তবুও সরকারের কোন টনক নড়েনি। তারা আজকে বলে যে, তাদের সময়ে কোন সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এতটাও বিস্মৃত নয় যে, ১৯৯১ এবং ২০০১ সাল ভুলে যাবে। বাড়িতে আক্রমণ করা সন্ত্রাসীদের যখন মা বলেছিল তোমরা একজন একজন করে আসো, আমার মেয়েটা মরে যাবে। আমরা কী এসব ভুলে যাবো? ভুলে যাবো ফাহিমা, মহিমাদের কথা?’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিদ্ধস্ত নাগরিক-প্রশাসনিক সকল কাঠামোহীন একটি রাষ্ট্রকে গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধু সময় পেয়েছিলেন ৩ বছর ৭ মাস। কিন্তু আমরা এখনও কোন কাজ করতে গেলে দেখি বঙ্গবন্ধুই প্রথমে তার ভীত তৈরী করে গেছেন। তিনি বাংলাদেশকে স্বাধীন ও মুক্ত করার কথা বলেছিলেন। নিজের অতীত ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য যা যা করা দরকার তার চেষ্টা করেছিলেন। মানুষের দুঃখ, কষ্ট ও বেদনাকে তিনি ধারণ করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু এই বাংলাদেশেরই বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। যে সোহরাওয়ার্দী মাঠে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ হয়েছিল ১৯৭৬ সালে সে মাঠে ছয় দফাকে পরিহাস করার জন্য চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাইদী নতুন ছয়দফা উত্থাপন করেছিল। আমাদের পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত এমনকি কেউ কেউ দেশের নাম পরিবর্তন করার কথাও চিন্তা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া যেত না। ‘জয় বাংলা’ বলা যেত না৷ ৭ মার্চের ভাষণ শোনা যেত না। অনেকে বলে, আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলাকে নিজেদের সম্পদ করে নিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, আওয়ামীলীগই বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলাকে বাচিয়ে রেখেছে।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাবি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রশীদ আসকারী, প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি মীজানুর রহমান, বিশিষ্ট কলামিস্ট মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান।