ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) বর্ষসেরা রিপোর্টের পুরষ্কার প্রদান ও নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে এই দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া একই অনুষ্ঠানে ‘সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্বের সংকট: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়৷
অনুষ্ঠানে ঢাবি ক্যাম্পাসে কর্মরত ছয়জন সাংবাদিককে বর্ষসেরা পুরস্কার দেওয়া হয়। বাংলা প্রিন্ট, ইংরেজি প্রিন্ট ও অনলাইন ক্যাটাগরিতে দুইজন করে এ পুরস্কার পান। এছাড়া মাসিক ক্যাটাগরিতে আরো ৭ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ‘শহীদ শাহ চিশতী হেলালুর রহমান ট্রাস্ট ফান্ড’ ও ‘মনোয়ার আহমেদ স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড’ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- বাংলা প্রিন্ট ক্যাটাগরিতে প্রথম আলোর আসিফ হাওলাদার ও কালবেলার মোতাহার হোসেন, ইংরেজি প্রিন্ট ক্যাটাগরিতে অবজারভারের তাওসিফুল ইসলাম ও নিউ নেশনের মনিরুজ্জামান মনির, অনলাইন ক্যাটাগরিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রাসেল সরকার ও ঢাকা পোস্টের আমজাদ হোসেন হৃদয়।
‘সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্বের সংকট: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকা করেন অনুসন্ধানী রিপোর্টার জুলফিকার আলী মানিক। তিনি বলেন, সাংবাদিকতাএকটি বৈশ্বিক পেশা। অনেকে সাংবাদিকতা নিয়ে সমালোচনা বা প্রশংসা করেন, অনেকে বুঝে বা না বুঝেও বিভিন্ন কথা বলে থাকেন। দেশের আইন রয়েছে, প্রত্যেক পেশায়ও একটা আইন রয়েছে, কেউ কিন্তু এর বাইরে যেতে পারেন না৷ সাংবাদিকতা এমন এক পেশা, যেখানে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে যার ফলে সাংবাদিকরাও তার বাইরে যেতে পারে না। সাংবাদিকতায় ব্রেইন খাটিয়ে কাজ করতে হয় আর ব্রেইনকে কিন্তু বন্দি করা যায় না।
তিনি আরো বলেন, সাংবাদিককে হতে হবে এককেন্দ্রিক, সে অন্য কোন পথে যাবে না কিন্তু আমরা এখন এটাকে মিশিয়ে ফেলেছি, কেউ শিক্ষক, চিকিৎসক, চাকরিজীবি ইত্যাদি। রাজনীতির চাইতে সাংবাদিকতা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে। সাময়িক দমন, কাজের গতি কমিয়ে দেওয়া সম্ভব কিন্তু কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। আজকে আপনি পছন্দ করতে পারেন না, কিন্তু আপনি বিপদে পড়লে ঠিকই সাংবাদিকদের কাছে আসেন। সাংবাদিকতা ক্ষমতাসীনদের শত্রু এবং বিরোধী দলের বন্ধু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। পৃথিবীর একমাত্র পেশা যার মূল লক্ষ্য ‘সত্য বলে দেওয়া’। মানুষ খারাপ কাজগুলোকেই লুকায় আর ভালো কাজকে প্রকাশ করে। আর এই লুকানো খারাপ কাজগুলোকে প্রকাশ করলেই মানুষ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে আমরা সাবেক কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে সমিতিকে পরিচালনা করেছেন। সাংবাদিক সমিতি একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যারা মূল্যবোধ রক্ষায় কাজ করেছে। ক্যাম্পাসে যখন রাজনৈতিক টানপোড়ন চলে যখন সকল রাজনৈতিক দলকে এক ছাদের নিচে উপস্থিত করিয়ে ভাব বিনিময় করিয়ে থাকে এই সাংবাদিক সমিতি।
ডুজার সভাপতি আল সাদী ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, ডুজার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বোরহানুল হক সম্রাট, ডুজার সদ্য সাবেক সভাপতি মামুন তুষার, সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম রুবেল বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় অনুষ্ঠানে সকল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও টিএসসি ভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।