সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে শপথ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সম্মিলিত কন্ঠে এ শপথ পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা।
শপথে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উৎখাতকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দিব। নৈতিকতার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমুলে উৎখাত করব।
শপথ পাঠ শেষে একটি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির চরমতম রূপ বারবার আঘাত হেনেছে আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে। ২০০২ সালে থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল ছাত্ররাজনীতির অন্ধকার অধ্যায় তার ভয়ংকর দাগ রেখে গেছে আমাদের এই ক্যাম্পাসে। কালের পরিক্রমায় নিজেরা আন্দোলন করে দাবি আদায় নিশ্চিত করে সব বাধা ডিঙিয়ে সকল শিক্ষার্থী একতাবদ্ধ হয়ে যখন সুস্থ সুন্দর একটি পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করেছে, তখনই আবারও বুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরপেক্ষ মনোভাবকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন স্বার্থানেষী মহল।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৩০ জুলাই সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে নাশকতার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে বুয়েটের ২৪জন বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জন শিক্ষার্থী আটক হয়। পরবর্তিতে আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার উপর আস্থা রেখে একটি সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার আশা করছি। যদি তারা প্রত্যেকেই দোষী প্রমাণিত হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের বিপক্ষে থাকবে। একইভাবে যদি তাদের মধ্যে কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তবে নির্দোষরা যেন আর কোনভাবে কোন হয়রানির স্বীকার না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট থাকর এবং বুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করব।
তারা আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট ওইসকল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোন সাংগঠণিক ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত কি না বা তারা ক্যাম্পাসে অন্য শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করছে কি না এই ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। যদি তাদের এরূপ কোন সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয় তবে ভার্সিটির অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। এবং যদি তারা নির্দোষ হয়, তাহলে তারা যেন সুস্থ একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে তার দাবি জানানো হচ্ছে।
বুয়েট ক্যাম্পাসে কোন ধরনের মৌলবাদ চর্চা হবেনআ বলে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন , সকল ধরনের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে, আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীদের যে দৃঢ় অবস্থান তা থেকে আমরা কোন অবস্থাতেই সরে আসব না। যেকোন ছাত্ররাজনীতি এবং মৌলবাদ চর্চা বুয়েট ক্যাম্পাসে কখনোই গ্রহনযোগ্য হবে না, তা সে যে দলেরই হোক না কেন।