ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল সহ তিনদফা দাবিতে গণতন্ত্রিক ছাত্র জোটের উদ্যেগে “ছাত্র-জনতার সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ(শুক্রবার) বিকাল চারটায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সাংবাদিক আবু সায়েদ খান বলেন , মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা বলে এই আইন মানুষের জীবনকে হত্যা করছে। সংবাদপত্রের সংবাদ প্রকাশ করা সাংবাদিকদের অধিকার। অথচ তাদের অধিকার খর্ব করে জেলে দেয়া হচ্ছে তাদের। যারা ব্যাংক লুট করে ও দূর্নীতি করে মানুষের জীবন দূর্বিষহ করে তুলছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা মানুষের অধিকার। এই আইন আমাদের জন্য একটি হুমকি। মুক্তিযুদ্ধ একটি ইতিহাস। ইতিহাস চর্চার অধিকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা ক্ষমতায় থাকে তারা ইতিহাসকে তাদের মত করেই মানুষের সামনে তুলে ধরেন। এই ইতিহাসকে মানুষের নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়ে দেখতে হবে। এই আইন জনগণের নিরাপত্তার জন্য নয়। এটা শাসক শ্রেণীর নিরাপত্তার জন্য প্রণোয়ন করা হয়েছে। শিক্ষক সাংবাদিক সকলে এই আইনের ভুক্তভোগী।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮২৩ সালে পত্রিকাগুলোতে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করে ব্রিটিশ সরকার। তখন ব্রিটিশ সরকার তার নিরাপত্তার জন্য এমন আইন করে। তখন আমরা ছিলাম ব্রিটিশ পরাধীনতার মধ্যে। এখন আমরা আছি সরকারি পরাধীনতায় বা আওয়ামী পরাধীনতায়। আজকে যারা একটি পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল করতে চাইছেন। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বাধীন হলেও মানসিক পরাধীনতায় আছে । ডিজিটালের আড়ালে এইসব আইন আমাদের আরো পিছনে নিয়ে যাবে। ব্রিটিশ শাসনের পরে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি ঠিকই কিন্তু স্বাধীন নাগরিক হতে পারিনি । আমাদের সংবিধানে মত প্রকাশের কথা বলা আছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আ্যক্ট এর মাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশ করার অধিকার খর্ব করা হয়েছে তার মানে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট আমাদের সংবিধান কে লংঘন করছেন।
সমাবেশে গবেষক মানহা মির্জা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা অদ্ভুত আইন। যে আইনের উপর ভিত্তি করে মানুষের অপরাধ বিবেচনা না করেই মাসের পর মাস জেল খাটতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তি করার কারণে এই পর্যন্ত ১১৪ টি মামলা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১৫ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভাতের কষ্টে কথা বলা যাবেনা। এটাও নাকি অপরাধ, স্বাধীনতা কটুক্তি করা।
এছাড়া সমাবেশে কার্টুনিস্টরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বিরোধি কার্টুন একে এই আইনের নিন্দা প্রকাশ করে।
তিন দফা দাবি হলো- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা , মতপ্রকাশকে ফৌজদারী অপরাধের আওতামুক্ত করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সকল মামলা প্রত্যাহার করা ও র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমির হত্যার বিচার।