ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ বিকাল ৩টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। “বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা” শীর্ষক আলোচনা সভায় সংগঠনের সাধারণ আল মামুন এর সঞ্চালনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বাঙ্গালি জাতির জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এইদিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ কারণ এই কালজয়ী ভাষণ একটি দেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। গণ সূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার অমর কবিতা শুনিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের অনবদ্য চিত্র তুলে ধরেছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়। কবি লিখেছেন , ‘সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’ এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম- এই দুই লাইনের মধ্যে স্বাধীনতার চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই অমর ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর জাতিসংঘের ইউনেসকো ঐতিহাসিক দলিল “মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। যুদ্ধ ও সামাজিক বিপর্যয় এবং সংরক্ষণের অভাবে বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিতে থাকা নথিগুলোকে ২০ বছর ধরে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে ইউনেসকো। এ পর্যন্ত এসব স্বীকৃতির মধ্যে ইউনেসকো প্রথম কোনো ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা ছিল অলিখিত। এজন্য বিশ্বে বসবাসরত সমগ্র বাঙালি জাতি অনেক গর্বিত।
ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন, বিএনপি-জামাত ঐতিহাসিক ৭মার্চের ইতিহাসকে বিকৃতি করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি পাকিস্তানের এজেণ্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি-জামাত রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে আগুন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি-জামাতকে বলতে চাই, মানুষের জীবন নিয়ে হোলি খেলা পরিহার করুন।
সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, গৌরব ৭১ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এফএম শাহীন, সংগঠনের সহ-সহ-সভাপতি কানিজ ফাতেমাসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিয়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা। সেই পতাকার মর্যাদা আমাদেরকেই সমুন্নত রাখতে হবে।