ফেব্রুয়ারি—ভাষার মাস। বইমেলার মাস। বইমেলা নিয়ে বড়দের যেমন পরিকল্পনার শেষ নেই, তেমনি শিশুরাও প্রতীক্ষায় থাকে বইমেলার। মা–বাবার হাত ধরে মেলায় যাবে, পছন্দের বই কিনবে, বাসায় এসে সেই বইয়ের মাধ্যমে ডুবে যাবে অন্য এক জগতে। কিন্তু এমন অনেক শিশু আছে, যারা শুধু বইমেলার খবর শুনে যায়, দেখা হয় না তাদের চোখ মেলে। বইমেলা তাদের পত্রিকায় দেখা অথবা টেলিভিশনের পর্দায় উপভোগের বিষয়।
বলছিলাম সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কথা। তাদের কখনো বইমেলা ঘুরে দেখা হয় না। গল্পের বইয়ের ভেতরে ডুবে যাওয়া হয় না। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এই অপ্রাপ্তি মেটাতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ দাঁড়িয়েছে তাদের পাশে। মেলায় বিকাশ আয়োজন করেছে ‘বই অনুদান কেন্দ্র’। এখান থেকে সংগৃহীত বই ও বিকাশের কিনে দেওয়া বই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের লাইব্রেরিতে বিতরণ করা হবে। ফলে শিশুরা লাইব্রেরি থেকে পছন্দের বই নিয়ে পড়তে পারবে।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় চতুর্থবারের মতো এই আয়োজন করেছে বিকাশ। ১০ ফেব্রুয়ারি এই অনুদান কেন্দ্রে দেখা যায় শিশুদের কিচিরমিচির ধ্বনি। স্কুল ড্রেস পরে তারা রাজশাহী থেকে এসেছে বিকাশের আয়োজনে। মেলা ঘুরে দেখে, মজার গল্পের বই উপহার পেয়ে তাদের দিনটি বর্ণিল হয়ে ওঠে।
কথাসাহিত্যিক ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হকের হাত থেকে বই নেওয়া ছিল বাড়তি পাওনা। এ সময় আনিসুল হক বলেন, বই শিশুদের মনের জানালা খুলে দেয়। শিশুদের আলোকিত করার জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে বই তুলে দেওয়ার এই পদক্ষেপ বিকাশের এক অনন্য উদ্যোগ।
আলোর পাঠশালার এক শিক্ষার্থী প্রথমবারের মতো এসেছিল বইমেলায়। কেমন লাগছে, এ প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, ‘আগে শুধু টিভিতে দেখতাম। এখন স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমিও বইমেলায় এসেছি। বই পেয়েছি অনেক। আমি অনেক খুশি।’