সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে। যে ঘটনাগুলোর সাথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। এ নিয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অপরাধে গতকাল রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন ইউনিটের ২২ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি।
বহিষ্কারের পরপরই এবার সামনে এসেছে ছাত্রলীগের আরো একটি চাঁদাবাজির ঘটনা। চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগের বিরুদ্ধে। সোহাগ ও তার সহযোগীরা শেরে বাংলা নগরের ইন্দিরা রোড এলাকায় একটি বাসায় গিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান। এ নিয়ে ভুক্তভোগী নাজমুল হোসাইন শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সোহাগ ছাড়াও ভুবন (৩০), নাহিদ (৩০) এবং কামাল উসমান (৩২) নামে তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ভুবন ও নাহিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামী আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগের পরিচয় মিললেও বাকিদের সম্পূর্ণ পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী এবং কবি জসীম উদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগ প্রায় সময়ে নজমুল হাসানের কাছে চাঁদা দাবী করতো। গত সাত ফেব্রুয়ারি সোহাগ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁর নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। নাজমুল চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হলে সোহাগ কয়েকজন লোক নিয়ে এসে গত শনিবার মধ্যরাতে নাজমুলের বাসায় প্রবেশ করে। তারা প্রথমে নাজমুলের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাজমুল, তার খালা ও খালাতো ভাইয়ের উপর হামলে করে।
অভিযোগ পত্রে নাজমুল উল্লেখ করেন, আমাকে বাচাঁতে আমার খালা শামসুন্নাহার বেগম (৫৮) এগিয়ে আসলে ভুবনের নিকট থাকা একটি খুর বের করে এবং আমার খালাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তাদের হামলায় আমার খালার পরনের মেক্সি ছিড়ে যায় এবং তাহার হাতে মাথায় নিলা-ফুলা জখম হয়। আমাকে বাচাতে আমার খালাত ভাই মো. তৌহিদুল ইসলাম এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা আমার খালাত ভাইকেও মারধর করে। পরবর্তীতে আমাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় সোহাগ।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে আব্দুল্লাহ আল মামুন সোহাগকে একাধিকবার কল করা হলেও পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরে বাংলা নগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মনির বলেন, ‘মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া দুজন হল ভূবন ও নাহিদ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।