বাংলা একাডেমির সভাপতি ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, উন্মুক্ত লাইব্রেরি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের জায়গায় একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিবে। আমাদের সবার চেতনার জগৎকে আলোকিত করবে, সবার মাঝে উঠে আসবে নানা দিগন্ত রেখা; যে দিগন্ত রেখা ধরে আমাদের বাংলা ভাষা ও আমাদের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে পরিচিতি পাবে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশমুখে অবস্থিত উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি দিবস ১৪২৯’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিনা হোসেন বলেন, আমাদের মানবিক মূল্যবোধ, শিল্প-সাধনা, সামাজিক পরিবর্তন, মানবিক দর্শন ও দেশপ্রেমে মানুষকে আগ্রহী করে গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি জেলা উপজেলা পর্যায়ে এই উন্মুক্ত লাইব্রেরি ছড়িয়ে দিতে হবে। উন্মুক্ত লাইব্রেরি আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের জায়গায় একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিবে। আমি নিজেই ৪ টি লাইব্রেরি করেছি। এই উন্মুক্ত লাইব্রেরিটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
‘বই হোক মুক্তির স্লোগান’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রথমবারের মত এ দিবস পালন করা হয়। এদিন দিনব্যাপী র্যালি, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, লোকগীতি, বাউল গান, আলোচনা সভা সহ নানা আয়োজনে উৎসবমুখর ছিল উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রাঙ্গন। এসময় প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য কুড়িগ্রামের জয়নাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে ‘পলান সরকার সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, একটি উদার, মানবিক ও ধর্মনিরেপক্ষ দেশ গঠনের কথা বলে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাজনৈতিক আন্দোলন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িত। রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে যদি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মিলন ঘটাতে না পারি তাহলে যে অঙ্গীকার সামনে রেখে আমরা যে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করি আমাদের যৌবন উৎসর্গ করি তা কখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমাদের শরীরের রোগ সারানোর আমরা যেমন হাসপাতালে ছুটাছুটি করি। আমাদের মনের রোগ সারানোর জন্য এমন উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রয়োজন প্রতিটি জায়গায়।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক থেকে উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষ বই পড়ার মাধ্যমে আরো বেশি মানবিক হয়ে উঠবে। আমাদের সমাজ একটি সুস্থ, সুন্দর সমাজে পরিণত হবে৷
ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও উন্মুক্ত লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা তানভীর হাসান সৈকত বলেন , দেশের কাঠামোগত উন্নয়নই শুধু উন্নয়ন না পাশাপাশি আমাদের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নও ঘটাতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময় আমাদের চিন্তার উন্নয়নের কথা বলেন। উন্মুক্ত লাইব্রেরি চিন্তার উন্নয়ন ঘটানোর জন্যই একটি পদক্ষেপ।