ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে হলটির শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের কয়েকজন থালাবাটি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ বিক্ষোভ করে ছাত্রীরা। প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে হলের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু প্রাধ্যক্ষকে না পেয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন তারা।
জানা যায়, সরস্বতী পূজা কেন্দ্র করে মেয়েদের বাকি হল বর্ণিল সাজে সাজানো হলেও মৈত্রী হলে লাইটিং কিংবা সাজসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জগন্নাথ হলে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে কুয়েত-মৈত্রী হল পরিদর্শনে যান। তখন প্রাধ্যক্ষ নাজমুন নাহার হলে ছিলেন না। দীর্ঘদিনে হলের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা এবং এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ভিসি বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতও সেখানে উপস্থিত হয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাওয়ায় অটল থাকেন। এরপর প্রক্টর ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা ও বিড়ম্বনার কথা শোনেন।
অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রাধ্যক্ষ বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাদের হলে আবাসন সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। হলের খাবার এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা ভালো নয়। ক্যাম্পাসে যাতায়াতের ব্যবস্থা অপ্রতুল। মেয়েরা অসুস্থ হলে প্রাধ্যক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। উল্টো তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
রাত পৌনে এগারটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রক্টরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের একটি দল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, শিক্ষকরা অভিভাবকসুলভ আচরণ না করলে এ রকম ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক। জেনেছি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ভালো ছিল না। আমরা ছাত্রলীগ যে কোনো যৌক্তিক দাবিতে শিক্ষার্থীদের পাশে আছি।