ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে দুই শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে নির্যাতনের প্রতিবাদে মশাল মিছিল হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাবির রাজু ভাস্কর্য থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে আবারও রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বক্তারা দ্রুতই নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানায়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় না আনা হলে শাহবাগ অবরোধ করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন। এছাড়াও, এসময় গেস্টরুম নির্যাতন বিরোধী আইন পাশ করার দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তবুদ্ধি ও গণতান্ত্রিক চর্চার একটি জায়গা। এখানে যেকোনো রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। কিন্তু ক্ষমতাসীন সংগঠনগুলো দল ও মত দমন করে থাকে। শুধু তাই নয় তাদেরকে হলে থাকতে দেয়া হয় না। আমরা দেখেছি মাত্র এক চল্লিশ শতাংশ শিক্ষার্থী হল সুবিধা পেয়ে থাকে। সেই এক চল্লিশ শতাংশ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে চলে তা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থী নির্যাতন আমাদের আবু গারিব কারাগারের কথা মনে করিয়ে দেয়। হল গুলোতে যারা দায়িত্বে থাকেন তারা বেতনও নিয়ে থাকে অথচ তারা শুধু ১৬ ডিসেম্বর আর ২৬ মার্চে হলগুলোতে যায়। শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধার সময় তাদের দেখা যায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানাই।
কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের দুই ছাত্রকে নির্যাতন করা হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়ত প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে, গনরুম- গেষ্টরুমে শত শত শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও নিপীড়ন করা হচ্ছে। কখনও কখনও কিছু ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসে; আমরা সেগুলোর প্রতিবাদ করি। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিকের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে, সভা- সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এফ রহমান হলের আবু বক্করের কথা ভুলে যাই নাই, আমরা এসএম হলের হাফিজুলের কথা ভুল যাই নাই, আমরা বুয়েটের আবরার ফাহাদের কথা ভুলে যাই। আমরা বার বার বলতে চাই, এই যে যারা এই ছাত্রলীগের নাম করে, যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গনরুম,গেস্টরুমগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কে অমানবিক,পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন; আপনাদের এই দিন কিন্তু আর দীর্ঘায়িত হবে না।
উল্লেখ্য, এর আগে গত রবিবার (২২ জানুয়ারি) বিজয় একাত্তর হলে শিবির সন্দেহে দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠে। এতে রবিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১১টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে হল প্রভোস্ট উভয় পক্ষের কথা শুনে ভুক্তভোগীকে প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দেয়।